ফ্রেঞ্চ ডাক্তার দিদিয়ের রাউল্ট এবার লার্জ নাম্বার অফ পেসেন্টসের (১০৬১) উপর হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনিন প্লাস এজিথ্রোমাইসিন কম্বিনেশন (HQ+AZM combo) প্রয়োগ করেছেন। রেজাল্টে দেখা গেছে ৯০ ভাগের বেশি পেসেন্টস রিকভার করেছে বাকিদের হয় ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ট্রান্সফার করতে হয়েছে অথবা ষ্টীল কিছু ভাইরাস লোড রয়ে গেছে শরীরে।
তবে এই গবেষকের মতে, শেষ পর্যন্ত ৯৮ ভাগ রোগী পরিপূর্ন রিকভার করেছে। এদের কারোরই কার্ডিয়াক টক্সিসিটি দেখা যায়নি। যে ক্ষুদ্র একটা অংশ (৫জন) মারা গেছে তাদের বয়স ৭৪-৯৫ এর মধ্যে, হয়তো বয়সের কারণে আর রিকভার করেনি।
দেখার বিষয় হলো এই স্টাডিটা করেছেন একজন কোয়ালিফাইড ডক্টর, সুতরাং যেসব সুশীলরা বলে বেড়াচ্ছে আমরা নন-এক্সপার্ট হয়ে HQ প্রমোট করছি তারা এখন কি বলবেন? সুতরাং কোথাকার কোন সেলিব্রিটি ডাক্তার যিনি সারাদিন টক্-শো আর মেকআপ নিয়ে ব্যস্ত তার পোস্ট ভাইরাল করার দরকার নাই, তিনি কথা বলেন ইন্টারনেট ঘেটে, প্রাকটিক্যাল এক্সপেরিয়েন্স ছাড়াই, আর এখানে রেফারেন্স দেয়া হচ্ছে এমন একজন ডক্টরের যিনি নিজে গবেষণা করে রিপোর্ট করেছেন। সতরাং থিঙ্ক ওয়াইজলি।
সর্বশেষ খবর হলো, ব্রিটেনের দুটি নামকরা হসপিটালও অতিসম্প্রতি HQ ট্রায়াল শুরু করেছে, সতরাং গাঁয়ের জোরে HQ এর ইফেক্টকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
এখন আরো একটা ইম্পরট্যান্ট বিষয় উল্লেখ করছি। HQ+AZM combo আসলেই সেফ কিনা এটা একটা প্রশ্ন। আমি ব্যক্তিগতভাবে HQ ইউজ করার পক্ষে হলেও HQ+AZM combo নিয়ে এখনো সন্দিহান। কারণ সাময়িক করোনা থেকে মুক্তি লাভ করা আর দীর্ঘ মেয়াদে সুস্থ থাকা এক নয়। এই কম্বিনেশন দিয়ে করোনা থেকে মুক্তি মেলার রিপোর্ট আমি পার্সোনালি বিলিভ করি, কিন্ত লং রানে এই কমিনেশনের effect on health কি হবে সেটা সম্পর্কে till now জানার উপায় নাই। সুতরাং এই কম্বিনেশন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
গুড নিউজ হলো, HQ ইটসেলফ সেফ। বিশাল একটা স্টাডি যেটার প্রি-প্রিন্ট এভেইল্যাবল, হয়তো কিছু দিনের মধ্যেই কোনো জার্নালে পাবলিশ হবে। জার্মানি, জাপান, নেদারল্যান্ড, স্পেন ও ইউএসএ এর বিজ্ঞানীরা একটা ম্যাসিভ স্টাডি করেছেন। বিজ্ঞানীরা অনলাইন ডাটাবেস থেকে ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কয়েক লক্ষ পেশেন্টের হিস্ট্রি বের করেছেন যারা রিউম্যাটিক আর্থরাইটিস রোগের প্রতিষেধক হিসাবে HQ ও sulfasalazine নামক আরেকটি ড্রাগ নিয়েছেন। দেখা গেছে এই দুটি ওষুধের সাইড ইফেক্টের তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তারমানে HQ সেবন করা অন্য সাধারণ আরেকটি ড্রাগের মতোই সেফ, বিশেষ করে শর্টটার্ম ইউজের ক্ষেত্রে। যদিও দেখা গেছে লংটার্ম ইউজ করলে কিছুটা কার্ডিওভাসকুলার এবনর্মালিটি দেখা দিতে পারে। করোনা এস্পেক্টে যেহেতু HQ লংটার্ম ইউজ করা হচ্ছে না, তাই কার্ডিয়াক সাইড ইফেক্ট নিয়ে চিন্তার কারণ নেই। বরঞ্চ এই স্টাডি HQ এর সাইড ইফেক্ট নিয়ে যে সব যেসব ভয়ঙ্কর প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে সেটা মিথ্যা প্রমান করেছে।
একই স্টাডিতে দেখা গেছে যারা HQ+AZM combo ইউজ করেছে (আবারো মনে করিয়ে দিচ্ছি এই সেবন করোনার কারণে নয় বরং অন্য রোগের কারণে, অন্য সময়ে) তাদের কারো কারো QT prolongation, হার্ট বিটের সমস্যা দেখা গেছে।
মূল মেসেজ হলো, কোরোনার ক্ষেত্রে যেহেতু HQ অথবা HQ+AZM combo লংটার্ম ইউজ করার দরকার হয়না, সেহেতু নিউ রিপোর্ট অনুযায়ী only HQ এর ইউজ কমপ্লেটেলি সেফ বলা যায়। HQ+AZM combo কিছু ক্ষেত্রে লংটার্ম ইউজে প্রব্লেম করলেও শর্টটার্ম ইউজে কার্ডিওভাসকুলার প্রব্লেম ঘটায় কিনা সেটা স্পষ্ট নয়, এমনকি এই বিশাল স্টাডি থেকেও ক্লিয়ার নয়। তাই কোরোনাতে শর্টটার্ম HQ+AZM combo থেরাপি ইউজ করা হলে পরবর্তীতে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হওয়া, না হওয়া দুটোরই সম্ভাবনা আছে বলা যায়। ফ্রেঞ্চ ডক্টরের স্টাডিতে এই কম্বো যেমন রিকভার্ড কারোর ক্ষেত্রেই সাইড ইফেক্ট শো করেনি তেমনি অন্য কোনো স্টাডিতে সাইড ইফেক্ট দেখা গেলে তাতেও অবাক হওয়ার কিছু নাই, দুটোই পসিবল। ধীরে ধীরে হয়তো আমরা এই বিষয়ে আরো জানতে পারবো।
লিমিটেশনস থাকলেও এটা অস্বীকার করার উপায় নাই, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনিন থেরাপি একটা আশা জাগিয়েছে বিশ্বব্যাপী। তবে আবারো সতর্কতাস্বরূপ বলছি, ডক্টরের এডভাইস ছাড়া এই থেরাপি সেলফ-প্রেসক্রাইবড করা যাবে না। থেরাপির বিষয়টা এতো স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড নয়। ডোজ, রোগীর কন্ডিশন, আন্ডারলায়িং হেলথ ইস্যু ইত্যাদি বিষয় খুব ইম্পরট্যান্ট, যেটা একজন কোয়ালিফাইড মেডিক্সই ভালো বুঝবে আম-জনতা চেয়ে।
লিখেছেন: সাইফুর রহমান
Post a Comment