দাদ/দাউদ সহজ থেকে কঠিন হওয়ার কারণ


আজ থেকে বছর দুয়েক আগেও দাদ/দাউদ (Tinea Corporis) খুব সাধারণ একটি চর্মরোগ হিসেবে বিবেচিত ছিল। জেনারেল প্র‍্যাক্টিশনাররাই এটা সারিয়ে তুলতে পারতেন। অথচ এখন এই রোগ সারানোটাই হয়ে উঠেছে Dermatologist দের জন্যে একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ!


রোগীদের অসচেতনতা, ফার্মেসিতে যারা বসেন তাদের খামখেয়ালিপনা, চর্ম রোগের উপর যথেষ্ট ট্রেইনিং না থাকা ডাক্তারদের ওষুধ প্রয়োগে অদূরদর্শীতা সবার সম্মিলিত প্রয়াসে এখন আমরা Anti fungal Resistance এর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। সোজা বাংলায়, আগে যে রোগ ১৪ দিনে সারতো এখন মাসের পর মাস একের পর এক এন্টি ফাংগাল ওষুধের প্রয়োগেও রোগ সারছে না।


তুষের আগুনের মত আস্তে আস্তে সারা শরীর ছেয়ে যাচ্ছে, বাড়ির একজন থেকে অন্যজনে ছেয়ে যাচ্ছে। যার কপাল ভাল, তিনি অল্পে মুক্তি পাচ্ছেন, যার ইমিউনিটি একটু কম বছরের পর বছর ভুগছে।


বিপদের শুরুটা হয়েছে স্টেরয়েড ক্রিমের যথেচ্ছ অপব্যবহার এর হাত ধরে। রোগী প্লেইন এন্টি ফাংগাল পান বা না পান Dermovate, Dermasol,Clovate, Betamesone সব লাগানো শেষ। এদিকে এন্টিফাংগাল জাতীয় ওষুধের ঠিক ডোজ এবং সময় ধরে ব্যবহার এর কোন খোঁজ নেই।


গত ২ মাসে এমন অসংখ্য পেশেন্ট পেয়েছি যাদের শরীরের >৭০% জায়গায় এই রোগ ছড়িয়ে গেছে! সব এন্টিফাংগাল দিয়েও সামলানো যাচ্ছেনা এরকমও কেইস ও এখনো ঝুলিতে আছে কয়েকটা।


সত্যিই খারাপ লাগে রোগীদের জন্যে! আমাদের সবার খামখেয়ালিপনা একটা রোগ কে কি থেকে কোন জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে! জানিনা এই রেসিস্ট্যান্ট অবস্থাটার শেষ কোথায়!


Treatment Resistant Tinea Corporis এ ভুগে থাকলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে। কোন shortcut নাই। ১ থেকে ৩ মাস লাগতে পারে রোগ সারতে,সময়টা নির্ভর করছে কত খারাপ ভাবে ইনফেকশনটা হয়েছে তার উপর। আর অবশ্যই পরিবারে সকল আক্রান্ত ব্যক্তির একসাথে চিকিৎসা করাতে হবে। নতুবা পারস্পরিক সংস্পর্শ থেকে সেরে গেলেও নতুন করে আবার হবে।


যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম(যেমন, ডায়েবেটিক পেশেন্ট, রেনাল ফেইলিওর এর পেশেন্ট, স্টেরয়েড/কেমো পাচ্ছেন এমন পেশেন্ট) শরীরে সিম্পটম দেখা দিলে চিকিৎসা নিতে একেবারেই দেরি করবেন না।


সঠিক সময়ে ডায়াগনোসিস এবং সঠিক চিকিৎসা ব্যতীত দ্বিতীয় কোন উপায়ে এই সমস্যার উত্তোরণ সম্ভব না।

Post a Comment

Previous Post Next Post