প্রথমত একটি স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল মেইনন্টেন করতে হবে- যাতে শরীরের ওজন (BMI) স্বাভাবিক থাকে। ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশি হলে নরমাল ডেলিভারি সম্ভাবনা কমে যায় এবং ডেলিভারির সময় বিভিন্ন ধরনের জটিলতা হতে পারে।
যাদের প্রেগনেন্সির পূর্ব থেকেই বিভিন্ন ধরনের মেডিকেল সমস্যা যেমন প্রেসার বা ডায়াবেটিস আছে তাদের কে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শে চলতে হবে, যাতে প্রেগনেন্সি কালীন সময় এ সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে থাকে।
যাদের একবার সিজার হয়েছে তারাও পরবর্তীতে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করতে পারেন। তবে এটি ডিপেন্ড করবে পূর্ববর্তী সিজার কি কারণে হয়েছিল এবং আরো কিছু ফ্যাক্টর এর উপর। যারা সিজারের পর নরমাল ডেলিভারি করতে চান তাদের উচিত হবে প্রথম থেকেই ই ব্যাপারে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে থাকা।
যে মায়েদের ডেলিভারি পেইন এর ভয়ে নরমালে অনিহা রয়েছে তারা সহজেই পেইন-লেস ডেলিভারি চেষ্টা করতে পারবেন। বাংলাদেশের অনেক হসপিটালে এখন এটি সম্ভব।
প্রেগনেন্সির প্রথম থেকেই মায়েদের উচিত নরমাল কাজ-কর্ম/এক্টিভিটি চালিয়ে যাওয়া। কিছু কিছু প্রেগন্যান্ট মায়েরা(প্লাসেন্টা প্রিভিয়া, প্রিটার্ম ডেলিভারির হিস্ট্রি ইত্যাদি) ছাড়া অন্য সবাই এসময় হালকা থেকে মাঝারি মানের ব্যায়াম এবং সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন 20 মিনিট হাঁটাহাঁটি করতে পারবেন। অনেকে প্রেগনেন্ট হলেই ভাবেন এখন তাকে রেস্টে থাকতে হবে, যার ফলে ডায়াবেটিস, প্রেসার, ওজন-বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন মেডিকেল ডিজঅর্ডার হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা কমে যায়।
মানসিক প্রস্তুতি এখানে একটি বড় ভূমিকা রাখে। সব মায়েদেরই মনে রাখতে হবে নরমাল ডেলিভারি একটি কষ্টকর প্রক্রিয়া হলেও মা এবং বাচ্চা উভয়ের জন্যই এর সুফল রয়েছে। আর ডেলিভারি পেইন সহ্য করার মত মানসিক প্রস্তুতি শুধু মাকে নিলেই চলবে না, পরিবারের অন্যান্যদের উৎসাহ এবং সাপোর্ট এক্ষেত্রে অতি জরুরী।
ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্য নিজে নিজে কোন ধরনের ওষুধ খাবেন না, এটি একটি উপরওয়ালা প্রদত্ত একটি প্রক্রিয়া যা স্বাভাবিক নিয়মে হয়। একটি নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষার পরও ডেলিভারি পেইন না উঠলে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ইন্ডাকশন এর মাধ্যমে ডেলিভারি পেইন উঠানো সম্ভব। এজন্য অধিক টেনশন বা দুশ্চিন্তা না করে একজন গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শে থাকবেন।
সবশেষে আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, সবরকম মানসিক প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে যখন নরমাল ডেলিভারি চেষ্টা করলে মা ও বাচ্চা উভয়ের ক্ষতি হতে পারে, এ সময় সিজারের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি না করাই ভালো। সর্বক্ষেত্রেই উপর ওয়ালার ভরসা করে একটি সুস্থ বাচ্চা আশা করা উচিত।
Post a Comment