আমরা পৃথিবীর প্রথম এন্টিবায়োটিক বলতে "পেনিসিলিন" কেই বুঝে থাকি। কিন্তু মজার বিষয় হলো- আরেকটা এন্টিবায়োটিক যেটা পেনিসিলিনের আগেই মানুষের মধ্যে ব্যবহার শুরু হয়। সেটা হলো -"সালফোনামাইড"। পেনিসিলিন ১৯২৮ সালে ফ্লেমিং কর্তৃক আবিষ্কৃত হলেও এর ব্যবহার শুরু ১৯৪২ সালে। US এক পুলিশ যার আম আলেকজান্ডার ছিল পেনিসিলিন ব্যবহারের প্রথম পেশেন্ট।
পেনিসিলিন ব্যবহারের ১০ বছর আগেই ১৯৩২ সালে সালফোনামাইড কে মানুষের শরীরে ব্যবহার করে চমক সৃষ্টি করেন জার্মান বৈজ্ঞানিক "জেরার্ড ডোমাক"। তিনি তার নিজের মেয়ের হাতে "স্ট্রেপটোকক্কাস" ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশনের চিকিৎসা করেন। সালফোনামাইড দিয়ে চিকিৎসার আগের দিনও সিদ্ধান্ত ছিল , তার মেয়ের ইনফেকটেড হাত কেটে ফেলতে হবে।
এই বিখ্যাত সালফোনামাইড এন্টিবায়োটিক "ডোমাক" প্রথমে বাজারে ছাড়েন "প্রন্টোসিল" নামে। আমাদের কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেপটিসেমিয়ার চিকিৎসা করা হয়েছিল এই প্রন্টোসিল দিয়েই।
ডোমাকের এই অভূতপূর্ব এন্টিবায়োটিক আবিষ্কার পৃথিবীর চেহারা বদলে দিয়েছিল। তার জন্য তিনি ১৯৩৯ সালে নোবেল পুরষ্কার পান। আর পেনিসিলিন আবিষ্কারের জন্য ফ্লেমিং নোবেল পুরষ্কার পান তার ৬ বছর পর , ১৯৪৫ সালে।
এখানে একটা বিষয় সবার জানা দরকার - পৃথিবীর প্রথম এন্টিবায়োটিক সালফোনামাইড যেটা এখন বাজারে "কোট্রাইমক্সাজোল" (কোট্রিম) নামে পাওয়া যায়। যেটার একটি ট্যাবলেটের দাম এখনো মাত্র ২ টাকা। কিন্তু শরীরের বিভিন্ন ইনফেকশনে এই এন্টিবায়োটিকের সেনসিটিভিটি সবচেয়ে বেশী। এখন হাজার টাকা দামের এন্টিবায়োটিকের চেয়ে এই দুই টাকার এন্টিবায়োটিকের কার্যকারীতা অনেক বেশি।
আমি সেটার প্রমাণ দিচ্ছি -
আমি গত মাসে একটা পেশেন্ট পেয়েছি টাইফয়েডের। যার উপর সেফট্রিএক্সোন ২ গ্রাম ( দাম প্রায় ৩০০ টাকা) করে ১৪ দিন দেয়ার পরেও জ্বর কমে নাই । কিন্তু তাকে ওরাল কোট্রাইমক্সাজোল ও ওফ্লক্সাসিনের কম্বিনেশনে মাত্র ৭ দিনেই সেই পূর্ন সুস্থ্য হয়ে যায়।
এই এন্টিবায়োটিক ব্যবহারও বুঝিয়ে দিচ্ছে - আমরা আবার পিছনেই ফিরে যাচ্ছি এবং OLD IS GOLD.
এখানে নাইস টু know :
এই সালফোনামাইড যে মানুষের শরীরে কাজ করতে পারে ইনফেকশনে এই ধারনা আবিষ্কার দিয়েছিলেন একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট। ১৯০৯ সালে পল গ্লিমো নামের পঞ্চম বর্ষের এক বাচ্চা মেডিসিন স্টুডেন্ট।
লিখেছেন- ডাঃ সাঈদ সুজন
إرسال تعليق