হাঁটুর নিচ থেকে পায়ের পেছনের দিকের মোটা ও লম্বা মাংসপেশিকে কাফ মাসল বলে। ঘুমের মধ্যে পায়ের কাফ মাসল সংকুচিত হয়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেননি এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। পায়ের রগে এমন হঠাৎ টান পড়ার কারণ, কী করবেন, প্রতিরোধের উপায় কী—তা নিয়ে এই আর্টিকেলটি লেখা হলো।
কেন হয়?
- শরীরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়ামের ঘাটতি।
- অতিরিক্ত ব্যায়াম, পরিশ্রম বা পায়ের পেশির বেশি ব্যবহার।
- পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন। খুব ঠান্ডা আবহাওয়া।
- গর্ভকালীন, বিশেষ করে শেষের দিকে প্রয়োজনীয় খনিজের অভাবে রগে টান পড়ে।
- বেশি সময় বসে থাকা, শক্ত জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা, ঘুমের সময় ভুল দেহভঙ্গির কারণে এমন হতে পারে।
কী করা উচিত?
- পা সোজা করে পায়ের পেছনের মাংসপেশিতে হালকা মালিশ করতে পারেন।
- গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে হালকা সেঁক বা পানির বোতলে গরম পানি দিয়ে সেঁক দিতে পারেন পনেরো থেকে বিশ মিনিট।
- ভয় পাবেন না, কারণ রিল্যাক্স পজিশনে থাকলে কিছু সময়ের মধ্যে ব্যথা চলে যায়।
- গর্ভকালীন যে রগে টান পড়ে, বেশির ভাগ সময় প্রসবের পর পায়ের টান চলে যায়।
প্রতিরোধের উপায়:
- নিয়মিত কাফ মাসল স্ট্রেচিং করতে হবে।
- সোজা হয়ে পায়ের আঙুলের ওপর ভর করে দাঁড়ালে কাফ মাসলে স্ট্রেচ হয়। দশ সেকেন্ড ধরে রেখে পা নামিয়ে ফেলুন। তিন বা চারবার করুন। প্রতিদিন অন্তত একবার।
- বসে দুই পা সোজা করে, তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা সামনের দিকে টেনে আনার চেষ্টা করুন। দশ সেকেন্ড ধরে রেখে ছেড়ে দিন। পাঁচ থেকে ছয়বার করুন।
- সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ত্রিশ মিনিট করে হাঁটুন
- শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব হলে পায়ের মাংসপেশিতে টান লাগে। তাই প্রচুর পানি বা তরল গ্রহণ করুন। যেমন স্যুপ, ফলের রস, ডাবের পানি ইত্যাদি।
- ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন ডিম, দুধ, সবুজ শাকসবজি, ফল, কলিজা ইত্যাদি।
- ডাক্তারের পরামর্শে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
- কিছু অবস্থান পরিহার করুন: যেমন পা ক্রস করে বসলে পায়ের ওপর চাপ পড়ে এবং রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। তাই এ ধরনের অবস্থানে বসবেন না। দীর্ঘ সময় একই ধরনের অবস্থানে না থেকে দু–এক ঘণ্টা পরপর বদলাতে হবে।
- রাতে যাঁদের বেশি ক্রাম্প বা টান হয়, তাঁরা ঘুমাতে যাওয়ার আগে গরম পানিতে গোসল করতে পারেন।
- সাঁতার খুব ভালো ব্যায়াম। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন সাঁতার কাটতে পারেন।
উল্লেখ্য যে, এবিষয়ে বেশি টেনশন করার দরকার নেই। আস্তে আস্তে তা ঠিক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে নিচের ওষুধগুলো খেতে পারেন-
- Tab, Vitamin B1, B6 & B12 (1+0+1) খাবার পর দুই মাস।
- Tab, Calcium and Vitamin D (0+0+1) খাবার পর দুই মাস।
- Tab, Esomeprazole 20mg (1+0+1) খাবার আগে দুই মাস।
- Tab, Aceclofenac 100mg (1+0+1) খাবার পর ১৫ দিন।
- [ডা:মোহাম্মদ আলী, চীফ কনসালট্যান্ট, বিজিএমইএ]
إرسال تعليق