সাধারণভাবে দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানাে উচিত। ৬ ঘন্টার কম এবং ৮ ঘন্টার বেশি ঘুমানাে স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ঘুমের এই কমবেশির কারণে বিভিন্ন শারীরিক অসুবিধা যেমন - অলসতা, ক্ষুধামান্দ্য, বদহজম, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরােগ বা অনুরূপ অসুস্থতা সৃষ্টি হতে পারে; এমনকি অকাল মৃত্যুও ঘটতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইতালির গবেষকগণ অকাল মৃত্যুর সঙ্গে দৈনিক ৮ ঘন্টার কম এবং ৮ ঘন্টার বেশি ঘুমের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন।
ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ফ্যাকাল্টির গবেষকগণ তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছেন - যারা দৈনিক ৫ ঘন্টার কম অথবা ৭ ঘন্টার বেশি ঘুমান, তাদের হৃদরােগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি; ৯ ঘন্টার বেশি ঘুমানােদের হৃদরােগে আক্রান্ত হবার নাকি ৭ ঘন্টা ঘুমানােদের চেয়ে দেড়গুণ বেশি। অন্য গবেষকগণ বলছেন, ৬ থেকে ৮ ঘন্টার ' আদর্শ ' ঘুমের চেয়ে কম ঘুম কিংবা বেশি ঘুমে সম্ভাবনা রয়েছে অকাল মৃত্যুর।
সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের ৬ ঘন্টার কম ঘুম কিংবা ৮ ঘন্টার বেশি ঘুম দুটোই শরীরের জন্য বিভিন্নভাবে ক্ষতিকর। ঘুম কম হলে সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়ােজনীয় কয়েকশ ' জিনের ক্ষতি হয়। যেগুলাে শরীরের রােগ প্রতিরােধ ব্যবস্থা , বিপাক প্রক্রিয়া , ঘুম ও জেগে ওঠার চক্র , মানসিক চাপে শারীরিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এর ফলে সুস্থ - স্বাভাবিক জীবনযাপনের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে।
এমনকি কম ঘুম যে পুরুষত্বহীনতা এনে দেয়, তা অনেকেরই জানা ছিল না এতদিন। সম্প্রতি জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল এসােসিয়েশন প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, কম ঘুমালে পুরুষের শরীরে টেস্টোসটেরনের মাত্রা কমে যায়। পুরুষের সুঠাম দেহের জন্য দরকার টেস্টোসটেরন হরমোন। এ হরমােনই পুরুষের পুরুষত্বের ধারক - বাহক। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এর মাত্র শরীরে কমতে থাকে। ফলে ঝুলে পড়ে চামড়া, দেখা দেয় বলিরেখা। শরীরে শক্তি কমে যেতে থাকে, কাজে মনােযােগ দেয়া কষ্টকর হয়; হাঁপিয়ে পড়ে একটুতেই। শুধু তাই নয়, এ হরমােনের মাত্রা কমে যৌন ক্ষমতা হ্রাস পায়।
স্বাভাবিক পুরুষদের জন্য গবেষকরা তাই নিয়মিত ৭ / ৮ ঘন্টা ঘুমাতে বলেছেন। তবে যারা মেডিটেশন করেন, তাদের ক্ষেত্রে এ রুটিন আলাদা।
রেফারেন্স:
- বই: সুস্থতা ও শতায়ু লাভে প্রাকৃতিক চর্চা ও চিকিৎসা
- লেখক: এম হেলাল
- প্রকাশক: ক্যাম্পাস পাবলিকেশন্স
- সংস্করণ: নভেম্বর ২০১৪
- পৃষ্ঠা: ৪৯
إرسال تعليق