অর্শ বা পাইলস কি?
মলদ্বারের চারপাশে রক্তনালির স্ফীতি এবং বৃদ্ধি পাওয়াকে অর্শ বলে।
এটা দেখতে অনেকটা কাঁঠালের মুচির মত। এটা ফুলে যায় এবং মলত্যাগের সময় চাপ ( ক্বোথ ) দিলে বের হয়ে আসে। আবার আঙ্গুল দ্বারা ভিতরে ঢোকানো যায় ।
কোষ্ঠকাঠিন্য এবং শক্ত মলের প্রতিনিয়ত চাপের ফলে এ রোগ বেশি দেখা যায়। অনেক সময় কারও কারও ক্ষেত্রে রক্ত মিশ্রিত কঠিন মল নির্গত হয়। মলদ্বারে জ্বালা ও অস্বন্তিকর যন্ত্রণা হয় , বসতে কষ্ট হয় , মলদ্বারে মাংসপিন্ড বৃদ্ধি পায়। কখনো মলের সাথে রক্ত মিশ্রিত পূঁজ নির্গত হয়।
লক্ষণ (Symptom)
১. মল ত্যাগের সময় ক্বোথ দিলে কাঁঠালের মুচির মতো বের হয়ে আসে; (কারো কারো ক্ষেত্রে বের হয়না)
২. মলের সাথে তাজা রক্ত পরে, কখনো পায়খানার আগে অথবা পরে; (কারো কারো ক্ষেত্রে রক্ত যায় না )
৩. কোমরে ও তল পেটে ব্যথা হয়।
8 . রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয়;
৫. রোগী পায়খানায় বসতে ভয় পায়।
৬. পায়খানা করার সময় অথবা পরে পায়ুপথে ব্যথা হয়।
পরামর্শ (Advice)
১ . প্রচুর পরিমাণে আশসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন;
২ . পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন;
৩. নিয়মিত ব্যায়াম করুন;
৪. মলত্যাগের জন্য অতিরিক্ত কোথ দেওয়া পরিহার করুন;
৫ . কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সতর্ক থাকুন;
৬ . নিয়মিত ব্যায়াম ও প্রাতঃ ভ্রমণ করুন। প্রচুর শাকসবব্জি , ফলের রস , প্রচুর পানি এবং লঘুপাক খাদ্য গ্রহণ করুন।
৭. লাল মরিচ, গরুর মাংস, বেগুন, শুঁটকি এবং গরম মসলাযুক্ত দ্রব্যাদি পরিহার করে চলুন। কৃমির উপদ্রব থাকলে নিয়মিত কৃমির ওষুধ সেবন করুন।
৭ . কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য সকালে এবং রাতে চিনি বা গুড় ছাড়া ইসুবগুলের ভুসির শরবত পান করুন।
৮ . মলদ্বারে ভেসলিন লাগালে অনেক সময় উপকার পাওয়া যায়;
৯ . নিঃশ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে ( অর্থাৎ দিনে দুই বার ১০ মিনিট করে মুখ বন্ধ রেখে নাক দিয়ে লম্বা করে শ্বাস নিন , শ্বাসের সাথে মলদ্বার ও তলপেট উপরের দিকে টানুন বা Contraction এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ার সময় মলদ্বার ও তলপেট ধীরে ধীরে ছাড়তে থাকুন বা Relax করুন।
১০ . প্রয়োজনে গামলা ভর্তি হালকা/কুসুম গরম পানিতে ২ চামচ লবণ দিয়ে ১০ মিনিট দিনে ১-২ বার বসে থাকতে হবে।
১১ . দীর্ঘক্ষণ বসে অথবা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করবেন না।
১২ . কোথ দিয়ে পায়খানা করবেন না।
১৩. ফাস্টফুড, জাংক ফুড, প্রসেসড ফুড , বোতল জাত খাবার, বিয়ে বাড়ির ভারী খাবার খাবেন না।
দ্রুত চিকিৎসকের সাথে সরাসরি দেখা করুন , সঠিক চিকিৎসায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপারেশন ছাড়া পাইলস ভালো হয়ে যায়।
লিখেছেন: ডা. মোঃ ফাইজুল হক
إرسال تعليق